আজ || সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরের ঝাওয়াইলে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ       গোপালপুরে দিনব্যাপী হাজী সম্মেলন অনুষ্ঠিত       গোপালপুরে বারেক মেম্বারের মৃত্যুবার্ষিকী পালন       গোপালপুরে বিদ্যুৎপৃষ্টে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু       গোপালপুরে ওয়ার্ডমাস্টার প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার প্রদান       গোপালপুরে সরকারি জমি দখল নিতে দুই পক্ষের উত্তেজনা, সড়ক অবরোধ       গোপালপুরে নূরানী মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত       দেড় যুগ পরে গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশ       গোপালপুরে স্বপ্নছোঁয়া এগ্রো ফার্মের ১০০ একর জমিতে ভূট্টার বীজ বপন       গোপালপুরে ধোপাকান্দি ইউনিয়ন জাসাসের সম্মেলন ও কমিটি গঠন    
 


বার্মিংহাম শিশু হাসপাতালে পায়ের হাড় দিয়ে মেরুদণ্ডের জোড়া!

ব্যতিক্রমী অপারেশনের মাধ্যমে পাঁচ বছর বয়সী এক মেয়ের মেরুদণ্ডের হাড় মেরামত করা হয়েছে। শিশুটির মেরুদণ্ডে ছিল এক বিশাল ফাঁক। আর এই ফাঁক বন্ধ করা হয়েছে তারই পায়ের হাড় নিয়ে।

সম্প্রতি বার্মিংহাম শিশু হাসপাতালে ১৩ ঘন্টা ধরে একদল নিউরো সার্জন জটিল এই অপারেশন সফল করেন।

চিকিৎসকরা বলেছেন, এ ধরনের ব্যতিক্রমী অপারেশনের উদ্যোগ সমগ্র ইউরোপে এর আগে কখনো নেয়া হয়নি। তবে এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি অপারেশন দশ বছর আগে নিউজিল্যান্ডে করা হয়েছিল।

শিশুটির মা-বাবা বলেন, অপারেশনের আগে সে ছিল একটি টাইম বোমা সদৃশ।

রোজি নামে এই শিশুটি জন্ম নিয়েছিল খুবই বিরল ও নাজুক এক শারীরিক অবস্থা নিয়ে। তার মেরুদণ্ডে ছিল ১০ সেন্টিমিটারের বড় এক ফাঁক। মেরুদণ্ড গঠনকারী পাঁচটি হাড় সেখানে অনুপস্থিত।

এর আগে রোজির পা দুটি কুঁচকে গিয়ে পেটের সাথে লেগে যাচ্ছিল এবং সেগুলো ছিল মূলত অনুভূতিশূন্য।

মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে ফাঁক হয়ে যাওয়া মানে তো তার দেহের ওপরের অংশের সাথে নীচের কোন যোগাযোগ না থাকা। এর ফলে তার ভেতরের অংগগুলোও ক্রমে নষ্ট হতে থাকে।

পরে পশ্চিম মিডল্যান্ডের ওয়ালসাল থেকে বার্মিংহামের শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে মেরুদণ্ডের ওই ফাঁক বন্ধ করার নাজুক অপারেশনের জন্য।

অপারেশনের আগে সর্বশেষ স্ক্যানে ধরা পরে, শিশুটির কিডনি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জীবনদায়ী এই অপারেশনে কাজে লাগানো হলো তার পা দুটিকে। অবশ্য সে তার পাগুলো মোটেও নড়াতে পারতো না।

অপারেশনে রোজির হাঁটুর নীচ থেকে কেটে সেখান থেকে একগুচ্ছ হাড় নেওয়া হয়েছে। মেরুদণ্ডের ফাঁকা পূরণ করতে সে হাড়গুলো জুড়ে দেয়া হয়েছে সেখানে।

তারপর দুটি ধাতব কাঠি উপরের দিকের মেরুদণ্ড এবং নিতম্বের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে বাড়তি সহায়তার জন্য।

রোজির পিতা স্কট বলেন, অপারেশনের আগে সে ছিল একটা টাইম বোমা। আমরা কিছুই জানতাম না কত সময় লাগবে আর কত সময় পর আমরা তাকে কাছে ফিরে পাব।

অপারেশনের পর থেকে ক্রমে একটি স্বাভাবিক শিশুর মতো জীবন ফিরে পাবার প্রত্যাশা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে মেয়েটির।

অপারেশনের পর থেকে তার পায়েও অনুভূতি ফিরে আসার লক্ষণ ফুটে উঠছে। এর ফলে আশা করা হচ্ছে হয়তো রোজি একদিন তার দুটি কৃত্রিম পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতেও সক্ষম হবে।

মেয়েটির মা-বাবা বলেছেন, রোজি এক দৃঢ় মনের অধিকারি শিশু। তার আত্মবিশ্বাস এখন অনেক বেড়ে গেছে।

আগে থেকেই সে চাইতো তার বোনদের মতো দৌড়াতে, সাইকেল নিয়ে ছুটোছুটি করতে। এখন তার মধ্যে সেই প্রত্যাশাগুলো ডানা মেলতে শুরু করেছে।

নিউরো সার্জনদের একজন গাইরিশ সোলানকি যিনি রোজির অপারেশন করেছেন বলেন, অপারেশনের ফলাফল দেখে আমরা খুবই আপ্লুত। পৃথিবীতে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন অপারেশ করা হলো, যার মাধ্যমে নিতম্বের হাড়ের সাথে মেরুদণ্ডের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। আর রোজির এই অবস্থাটি ছিল খুবই বিরল।

এটি ছিল খুবই জটিল অবস্থা যার ফলে স্বাভাবিকভাবে কোন শিশুর পক্ষে কোন কাজ করাই সম্ভব হতো না। কিন্তু রোজি সেটা পেরেছে।

এখনএই ব্যবস্থাটিকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে যেন তার স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে পড়ে।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!