প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা একটা নির্বাচন করতে পালেন না, তাদের তত্ত্ব কথা শোনার অভিপ্রায় আমাদের নেই। তিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার ষড়যন্ত্রে এখনো ক্রিয়াশীল জানিয়ে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, “একটা শ্রেণি আছে। যারা জনগণের সামনে যেতে পারে না, কিন্তু তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ আছে। তাদের দল করার, জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই।”তাদের পত্রিকা আছে, মিডিয়া আছে। যা ইচ্ছা লিখে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের অর্থ আছে। আপনাদের বুঝতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।” ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা বিভিন্ন টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন, তাদেরও সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।”যারা একটা নির্বাচন করতে পারলেন না। তাদের কাছ থেকে তত্ত্ব কথা শোনার কোনো অভিপ্রায় আমাদের নেই।”বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের এই সভায় বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ করার অঙ্গীকারও করেন।”বিচার হবেই হবে। দেশের মানুষকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করব।”পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালে ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার আহবানও জানান প্রধানমন্ত্রী। ষড়যন্ত্রের জন্য বিএনপিকেও দায়ী করেন তিনি।”নানা ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। সরকারের কাজে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দোসররাও জড়িত।”বিএনপি চেয়ারপারসনের তীব্র সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “দেশের মানুষের শান্তি একজনের পছন্দ হয় না। তিনি হলেন ‘অশান্তি বেগম’।
মানুষ অশান্তিতে থাকলে উনি খুশি থাকেন।”সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিজ্ঞতা বিরোধীদলীয় নেতাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,
“আপনি যাদের আনতে চান, যাদের পরামর্শ শোনেন। তারা কী আপনাকে ছাড়বে? আপনার দুর্নীতির হিসাব তো রয়ে গেছে। হাওয়া ভবনের পাওয়া তো রয়ে গেছে।””আমরা তো ধীরে চলছি। তারা তো দ্রুত চলবে,”বিরোধীদলীয় নেতাকে সতর্ক করে দেন প্রধানমন্ত্রী। মওদুদ আহমদের নাম উলেখ না করে তার পরামর্শ না শুনতে খালেদা জিয়াকে আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “যার ২০ নামে ২০টা অ্যাকাউন্ট আছে। মৃত ব্যক্তির নামে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়ে বাড়ি দখল করে- তাদের তত্ত্ব কথা শুনলে আপনার মঙ্গল হবে না।”
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “হাওয়া ভবনে বসে দ্বৈত শাসন চালিয়েছে। দেশের মানুষের টাকা লুটপাট করেছে। বিদেশে সে টাকা পাচার করেছে। সে টাকাও আমরা ফেরত এনেছি।” আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ নাসিম, মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, এ বি তাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। আলোচনা সভায় ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’নাটকের কিছু অংশ পড়ে শোনান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।