সনটা ছিল ১৯৭৬
কি মাস মনে নেই।
জেলখানা থেকে তোমার পাঠানো চিঠিটা পেলাম
ডি.এস.বির বহু ছিল ছাপ্পর মারা।
সারাদিন সময় পাইনি চিঠিটা ভাল
করে পড়ার।
বিকেলে গোধূলির আলো মিলিয়ে
সন্ধা এলো তার কৃষ্ণবর্ণ চাদরে।
তুমি যাবার দীর্ঘ ন মাস পরে চিঠিটা পেলাম
ওটা খুলতেই দু’ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো টিঠির বুকে।
নিষ্প্রাণ কাগজের টুকরো তো আমার অনুভূতি
কিছুই টের পেলোনা সে।
শুধু অক্ষর গুলিকেই ম্লান করে দিলো।
তুমি লিখেছো, আমি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি
তোমাকে দু কলম লিখিনা কোনো?
তোমার লিখিত লাইনগুলি আমি তো হাজার বার পড়ি
কেনো তা করি?
এতেই যে তোমাকে কাছে পাই।
জীবন ও জগতের কঠিন দশা
আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে নির্মমভাবে ॥
আমি তোমার জন্যে তো অনেক কেঁদেছি
ছেলে মেয়ের মনোও কেঁদেছে।
আমাকে আরও কাঁদিয়েছে, দুখিনী
ময়নবের নিঃস্বার্থ ভালোবাসাও সরলতা।
আমাকে কাঁদিয়েছে বাল্য বিবাহের শিক্ষায়
সোনালী ও জয় তহুনের অকাল মৃত্যু।
আমাকে আরও কাঁদিয়েছে যৌতুকের বলী
কিশোরী মায়াবতীর আত্ম হত্যা।
আমাকে কাঁদিয়েছে নিষ্ঠুর, লম্পট স্বামীর
বেদম প্রহারে নয়ন তারা যখন শয্যাশায়ী।
ওদের নিষ্পাপ মুখগুলি আমার মনের ক্যানভাসে
অবিরত ছবি আঁকে।
অশ্রুজলে শুধু দু চোখ ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় আমার
ভাঙা মনের দরজায় কড়া নেড়ে যায়।
ভেতরে যারা শুদ্ধতা ও মানবতাকে পালন করেন
তাদের প্রবল সংবেদনশীল মন,
সজাগ দৃষ্টির মানুষ, তাদের দ্বারাই ঘুচুক অন্ধকার।
আলো আসুক সবার চোখে
লোনা জলের বদলে।
জীবনের পাতা খুলে দেখি শুধুই শূণ্যতা
সবই ফাঁকা।
কিলিখি তোমায়? শুধুই ঝরাপাতার আখ্যাস।
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩