মেহেদী হাসান :
একজন মানুষ সে নারী বা পুরুষ যাই হোক না কেন শিশু, কৈশোর, যুবকাল অতিক্রম করে এক সময় সে প্রবীনে এসে উপনীত নয়। প্রবীণ বয়সে বস্তুতপক্ষে একজন মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যদের সাথে বেড়ে যায় তার দুরত্ব। পরিবারের শিশু-কিশোররাই হয়ে দাঁড়ায় তাদের চলার পথের প্রধান অবলম্বন। পুরুষ প্রাবীণরা বাহিরে গিয়ে ঘোরাফেরা করে নিজেদের নিঃসঙ্গতা কিছুটা দুর করতে পারলেও নারী প্রবীণদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। অসহায়ত্ব বরণ করে নিয়ে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যেই তাকে সময় কাটাতে হয় শিশুকাল থেকে শুরু করে প্রবীণে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত মানুষ বিভিন্ন ভাবে কোন না কোন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কমৃসংস্থানের সাথে জড়িত থেকে সময় অতিক্রান্ত করে থাকে। কিন্তু একজন মানুষ যখন প্রবীনে এসে উপনীত হয় তখন বাহিরের জগতের এ সকল সংগঠন তার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। সংগঠনসমূহ মানুষের অধিকার আদায়ের অন্যতম নিয়ামক হলেও তৃণমুল পর্যায়ে প্রবীণ সংগঠন না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই প্রবীণরা তাদের আইনগত ও নৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে অতি দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের প্রবীণ নারী-পুরুষরা বেশি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রবীণদের অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে সরকার ২০১৩ সালের জাতীয় প্রবীন নীতিমালা ও ২০১৪ সালে পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন পাশ করেছেন। এছাড়াও সম্প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি দেশের ১ কোটি ২০ লাখ প্রবীণকে সিনিয়র সিটিজেন হিসাবে ঘোষণা করেছেন। এই সিনিয়র সিটিজেনদের সরকার বিশেষ কার্ড প্রবর্তন করবে যার বিনিময়ে তারা চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা পাবেন। প্রবীণদের মর্যাদা বৃদ্ধি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তৃণমুল পর্যায়ে প্রবীণ সংগঠন না থাকায় প্রয়োজনীয় প্রচারণার অভাবে অধিকাংশ প্রবীণদের কাছে বিষয়গুলো অজানা রয়ে গেছে।
আসুন আমরা সবাই প্রবীণ অধিকার সুরক্ষায় সকলে এগিয়ে আসি। নিজের বিবেককে জাগ্রত করে একটু ভেবে দেখি, এই প্রবীণ ব্যক্তিরা আমারদের জন্য এক সময় কষ্টকরে আমাদেরকে লালান-পালন করে তুলেছে। এরা আমাদের কারো বাবা, কারো মা, কারো দাদা, এদের সুরক্ষা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩