কে এম মিঠু, গোপালপুর : অবশেষে অসহায় রেনুবালার ভাগ্যে বয়স্ক ভাতার কার্ড জুটলো। আজ মঙ্গলবার গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসূমুর রহমান নিজ কার্যালয়ে রেনুবালার নিকট বয়স্ক ভাতার কার্ড হস্তান্তর করেন। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, ধোপাকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, হেমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রওশন খান আইয়ুব, নগদাশিমলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এডভোকেট আবুল কালাম জুরাত এবং বেসরকারি সংস্থা ফ্রাইডের মহাসচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার রুহুল আমীন, সাংবাদিক কে এম মিঠু।
উল্লেখ্য, ৮০ বছর বয়সের রেনুবালা ছিল এক মায়ের জারজ সন্তান। গোপালপুর উপজেলার নলিন বাজার নিষিদ্ধ পল্লীর এক দেহব্যবসায়ীর নিকট কাটে তার বেড়ে উঠা। যৌবনের ৩৫ বছর কাটে ওই আদিপেশায় ভর করে। এলাকাবাসি ১৯৮৭ সালে ওই নিষিদ্ধ পল্লী উচ্ছেদ করলে দালালের খপ্পরে পড়ে ভারতে পাচার হন রেনুবালা। কোলকাতার সোনাগাছিসহ দিল্লীর বৃহৎ নিষিদ্ধ পল্লীতে কাটে তার এক দশক। বয়স বেড়ে গেলে সেখান থেকে বিতাড়িত হন তিনি। দিল্লীর আজমীর শরীফ থেকে কেনেন একটি ধূপদানি। ৯৬ সালে দেশে ফেরেন। সবাই অনাত্মীয়। দেহব্যবসা করতেন বলে কেউ বাসাবাড়িতে কাজ দেয়নি। শেষ পর্যন্ত ভারত থেকে আনা ধূপদানিই হয়ে উঠে তার জীবিকার অবলম্বন। একটানা দুই দশক ধরে গোপালপুর শহরের দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ধূপ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ধূপদানি সাজিয়ে সুগন্ধ ছড়িয়ে দেন রেনুবালা। দোকানিরা দুইএক টাকা করে সেলামী দেয়। এতে মাসে আয় এক দেড় হাজার টাকা। নিজের থাকার ঘর নেই। অটুলি থাকেন পৌর শহরের কোনাবাড়ি মহল্লায় এক জীর্ণ ঘরে। বয়স বাড়ায় নানা রোগ বাসা পেয়েছে তার শরীরে। আয়রোজগারও কমে গেছে। এজন্য প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু দেহব্যবসার সাথে জড়িত থাকার ঘৃণায় পৌর কর্তৃপক্ষ তাকে কার্ড দেয়নি। সম্প্রতি বেশকটি দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে রেনুবালাকে নিয়ে ‘ধূপের সুগন্ধ ছড়িয়ে জীবনের গ্লানি বিতারনের লড়াই রেনুবালার’ শিরোনামে সচিত্র খবর ছাপা হয়। খবরটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসূমুর রহমানের নজরে পড়লে তিনি অসহায় রেনুবালার জন্য বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করেন।
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩