নিজস্ব সংবাদদাতা :
গোপালপুরে এক ভূমিখেকো ও চাঁদাবাজের শাস্তি দাবি করা হয়েছে। গতকাল গোপালপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি করা হয়। লিখিত অভিযোগে ডুবাইল গ্রামের মাহিদুল ইসলাম ও মরিয়ম আক্তার অভিযোগ করেন, এলাকার চাঁদাবাজ ও মামলাবাজ ফজলুল হকের দরুন তাদের জীবন অতিষ্ঠ। চাঁদা না দেয়ায় তাদের উপর হামলা এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। ফজলুল হক এলাকায় সন্ত্রাসী প্রকৃতির মানুষ। এলাকাবাসি তার ভয়ে সর্বদা তটস্থ থাকে। চুন থেকে পান খসলেই নিরীহ মানুষের উপর নির্যাতনের খড়গ নামানো হয়। ইদানিং আত্মীয়স্বজনরাও তার হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেনা। মরিয়ম আক্তারের সাথে ফজলুল হকের বিরোধ ডুবাইল বাসস্ট্যান্ডের ৫৪০ খতিয়ানের ৫১৫ দাগের দুই শতাংশ জমিতে মার্কেট নির্মাণ নিয়ে। একই দাগ ও খতিয়ানে ফজলুল হকের সাড়ে তিন শতাংশের একটি লাগোয়া প্লট রয়েছে। পৌরসভার অনুমতি নিয়ে মরিয়ম নিজস্ব প্লটে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিলে ফজলুল হক প্রথমে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিবাদ শুরু করে। পৌর মেয়রসহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা এক সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি ফয়সালা করে দেন। ফজলুল হক প্লটের মাঝখানে তিন ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়ে মরিয়ম আক্তারের সাথে সবার সামনে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। মরিয়ম একতলা ভবন নির্মাণ শেষ করলে ফজলুল হক চুক্তিপত্র একতরফাভাবে বাতিল ঘোষণা করে। দাবি করা হয় বিপুল অঙ্কের চাঁদা। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাধ্য হয়ে তাকে দুই দফায় চল্লিশ হাজার টাকা চাঁদা দেয়া হয়। এতে ফজলুল হকের লোভ বেড়ে যায়। পরবর্তীতে আরো এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে নির্মাণ কাজ পুনরায় বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় গত ৮ ডিসেম্বর মরিয়ম বেগম ভবন নির্মান কাজে গেলে ফজলুলহক ও তার পক্ষের বাহিনী বাধা দেয়। এক পর্যায়ে মরিয়ম বেগমের উপর রামদা ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তার শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়। ভাই মাহিদুল ভগ্নি মরিয়মকে রক্ষা করতে গিয়ে রামদায়ের আঘাতে আহত হন। মরিয়ম গোপালপুর হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন। মাহিদুল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। এ ব্যাপারে গোপালপুর থানায় ফজলুল হকসহ পাঁচজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মাহিদুল আরো অভিযোগ করেন ফজলুল হক একজন ভূমিখেকো। একই দাগ ও খতিয়ানে মৃত আব্দুস সামাদের পুত্র তোফাজ্জল হোসেন খোকনের কোটি টাকা মূল্যের এক শতাংশ জমি জবরদখল করে দোকানপাট তুলেছে। ফজলুল হক আপন বড় ভাই সাবেক পৌর কমিশনার আবুল হোসেনের দেড় বিঘা জমি জোর করে দখলে নিয়ে আবাদ করছে। উল্টো আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে ওই কমিশনারকে হয়রানি করছে। সংখ্যালঘুরাও ফজলুল হকের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা। সম্প্রতি জঙ্গীদের হাতে নিহত ডুবাইল মহল্লার নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারের দুই ভাইয়ের জমিও জবরদখল করে দোকানপাট গড়েছেন ফজলুল হক। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাহিদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন ফজলুল হকের বড় ভাই সাবেক পৌর
কমিশনার আবুল হোসেন, ইসমাইল হোসেন, হুমায়ুন কবীর, রাজীব হোসেন বাবলু, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রমুখ। এ ব্যাপারে গোপালপুর থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগের তদন্ত চলছে।
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩