রাজধানী বৈরুতে হামলার পর থেকে লেবাননে উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার পেছনে দামেস্ক জড়িত বলে বিরোধী রাজনীতিকেরা অভিযোগ করছেন। গতকাল শনিবার লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এ অবস্থায় লেবাননের মন্ত্রিসভা জরুরি বৈঠক করেছে।
তারা ব্যর্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে। হামলার প্রতিবাদে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বৈরুত, সিডন, ত্রিপোলি ও বেকা উপত্যকায় সড়ক অবরোধ করে। এ সময় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়।
গত শুক্রবার বৈরুতে খ্রিষ্টান অধ্যুষিত আশরাফিয়েহ এলাকায় একটি গাড়িবোমা হামলায় আটজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দাপ্রধান উইসাম আল-হাসানও রয়েছেন।
লেবাননের বিরোধীদলীয় নেতা সাদ হারিরি বলেন, ‘উইসাম আল-হাসান আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়োজিত ছিলেন। তাঁকে হত্যার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দায়ী। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’
লেবাননের জাতীয় ঐক্য ব্যাহত করতেই শুক্রবার হামলা চালানো হয় বলে মন্তব্য করেছে ইসলামপন্থী সংগঠন হিজবুল্লাহ। ওই হামলায় নিহতদের স্মরণে লেবাননে গতকাল শনিবার জাতীয় শোক পালন করা হয়।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি সমর্থনের ব্যাপারে লেবাননের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। রাজধানী বৈরুতে শুক্রবার বাশারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, বৈরুতে হামলার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। হামলাকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাস্টন বৈরুতে ‘ঘৃণ্য হামলার’ পর লেবাননের সব রাজনৈতিক দলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ওই হামলাকে ‘বিপজ্জনক সংকেত’ উল্লেখ করে বলেন, এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, লেবাননের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করতে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। অপরাধের দায়মুক্তি এবং রাজনৈতিক গুপ্তহত্যা ও অন্যান্য সহিংসতা থেকে দেশটিকে বেরিয়ে আসতে হবে।
লেবাননে ২০০৫ সালেও একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। এতে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি নিহত হন। ওই ঘটনার পর লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় সিরিয়া। তবে প্রতিবেশী দেশটির ওপর দামেস্কের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ এখনো রয়ে গেছে। এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি।