পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দলপতি ড্যারেন স্যামির অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৭৫ রানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-২ সমতা ফিরিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরপুরে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২১১ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ৩৪ ওভার ১ বলে ১৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ড্যারেন স্যামি ও কেমার রোচের বোলিং তোপে বাংলাদেশ শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দুই বলের মধ্যে আনামুল হক ও নাঈম ইসলামকে বিদায় করে প্রথম আঘাত হানেন স্যামি। পরের ওভারে চার বলের মধ্যে তামিম ইকবাল ও নাসির হোসনকে বিদায় করেন কেমার রোচ। ষষ্ঠ ওভারে স্যামি মমিনুল হককে কাইরন পোলার্ডের ক্যাচে পরিণত করলে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১৩/৫।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে এই মাঠেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানে অলআউটের লজ্জায় পুড়েছিল বাংলাদেশ। মমিনুলের বিদায় তার পুনরাবৃত্তির শঙ্কা জাগায়। ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৭৪ রানের জুটি সেই শঙ্কাকে পেছনে ফেললেও দলকে সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে যেতে পারেনি। সুনীল নারায়ণের ক্যারাম বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে অধিনায়ক বিদায় নিলে দল আবারো চাপে পড়ে। সপ্তম উইকেটে সোহাগ গাজীর সঙ্গে মাহমুদুল্লাহর ২৬ রানের জুটি স্বাগতিকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। কিন্তু প্রান্ত বদল করা বীরাসামি পারমল পরপর দুই বলে সোহাগ ও ইলিয়াস সানিকে সাজঘরের পথ দেখালে স্বাগতিকদের বিপদ আরো বাড়ে। সোহাগ অবশ্য আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট হন। এরপর মাশরাফি বিন মুর্তজা ও আব্দুর রাজ্জাক দ্রুত বিদায় নিলে দেড়শ পর্যন্ত যেতে পারেনি স্বাগতিকরা। অব্যবহৃত থেকে যায় ৯৫ বল। মাহমুদুল্লাহ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে। তার ৭৮ বলের ইনিংসে ৭টি চার।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ভালো হয়নি। একমাত্র পেসার মাশরাফির ওপর চড়াও হতে গিয়ে দলীয় ২৯ রানে সোহাগে হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ক্রিস গেইল বিদায় নিলে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। রানের জন্য লড়াই করা গেইলকে এ নিয়ে টানা তিন ওয়ানডেতে সাজঘরে ফেরালেন মাশরাফি। আগের ম্যাচে তিনবার জীবন পেয়ে শতক পাওয়া মারলন স্যামুয়েলস এই ম্যাচেও দুবার জীবন পাওয়ায় ১৭ ওভারে ১ উইকেটে ৭১ রানের স্বস্তি দায়ক অবস্থায় ছিল অতিথিরা। আব্দুর রাজ্জাক, সানি ও মাহমুদুল্লাহর ত্রিমুখী আক্রমণে পরের ১৮ ওভারে ৩৫ রান তোলতেই ৫ উইকেট হারায় তারা। অতিরিক্তি মারতে গিয়ে সানির বলে আনামুলের সহজ ক্যাচে পরিণত হয়ে বিদায় নেন স্যামুয়েলস। পরের ওভারের প্রথম বলে রানের খাতা খোলার আগেই ডোয়াইন স্মিথকে সাজঘরে ফেরত পাঠান রাজ্জাক। ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে পাওয়েলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন সানি। শুরু থেকেই অস্বস্তিতে থাকা কাইরন পোলার্ডকে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ১০২ রানে উইকেটরক্ষক ডেভন টমাসকেও ফেরান তিনি। সপ্তম উইকেটে ব্রাভোর সঙ্গে স্যামির স্যামির ৪৩ রানের জুটি অতিথিদের দেড়শর কাছাকাছি নিয়ে যায়। সানির বলে ব্যক্তিগত ১০ রানে মুশফিকের হাতে জীবন পাওয়া ব্রাভো ফেরেন সোহাগের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। এরপর একাই খেলেছেন স্যামি। পারমলকে মাহমুদুল্লাহ ও সুনীলকে রাজ্জাক ফিরিয়ে দিলেও স্যামির অর্ধশতকের সৌজন্যে দুশ পেরুয় অতিথিরা। শেষ পর্যন্ত ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক। তার ৬২ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার মাহমুদুল্লাহ। এছাড়া সানি ও রাজ্জাক নেন দুটি করে উইকেট।