মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ দাবি করেছেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চাইছেন, শুধু তারাই এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পৃথিবীর যত দেশে যুদ্ধপরাধীদের বিচার হয়েছে, কোনো দেশে এত স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার হয়নি। এটা সারা পৃথিবীর জন্য একটি মডেল হয়ে থাকবে। বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এসময় আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে বিএনপি নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে।
বিচার নিয়ে সরকার দলীয় নেতাদের আগাম মন্তব্যও এতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না দাবি করে তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্যও বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে না। এসব মন্তব্য জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ও জনগণের প্রত্যাশা। দেশের মানুষ প্রত্যাশা করছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ হোক।
বিচার শেষে দেয়া রায় কবে নাগাদ কার্যকর করা হবে, এ প্রশ্নের জবাবে শফিক আহমেদ বলেন, রায়ের পর এ নিয়ে আপিল হবে এবং আপিলের প্রক্রিয়া শেষের পরই রায় কার্যকরের বিষয় আসবে। এক্ষেত্রে আইন তার আপন গতিতেই চলবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের অর্থ হচ্ছে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের সুবিচার নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির বা বিএনপি যে পেছন থেকে নৈতিক সহায়তা দিয়ে হরতাল ভাঙচুর করছে, এসব করে কোনো অবস্থাতে বিচারকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। বিচার অবশ্যই হবে। আদালত (ট্রাইব্যুনাল) দক্ষতা ও সততার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এ বিচার এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধটি আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত। আর বিচারটি হচ্ছে দেশের আইনে এবং দেশীয় আদালতে। এতে আন্তর্জাতিক আইনে মানবতাবিরোধী চিহ্নিত অপরাধ, খুন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের বিচার দেশীয় আইনে হচ্ছে। যত বাধাই আসুক না কেন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবেই।
নুরেমবার্গ ট্রায়ালের উদাহরণ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, নুরেমবার্গ ট্রায়ালে আইনজীবী এবং বিচারকদের দেশের বাইরে থেকে নেয়া হয়েছে। অথচ আমাদের দক্ষ নিজস্ব বিচারকদের নিয়েই বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
যুদ্ধাপাধীদের বিচার হবে কিনা তা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এ আইনে যুদ্ধাপারীদেরও বিচার করা যাবে। আইনে বলা আছে, যে দেশেরই নাগরিক হোক না কেন যুদ্ধাপরাধের জন্য তার বিচার করা যাবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, দক্ষতার সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়া চলছে। ১৯৭৩ সালের আইন সংশোধন করে সাধারণ অবস্থায় (সিভিলিয়ন ক্যারেক্টর) দেয়া হয়েছে। আগের আইনে তিনজন বিচারকের মধ্যে একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা রাখার বিধান ছিল। আইন সংশোধন করে তিনজন বিচারক নিয়োগের বিধান করা হয়েছে।