বাংলাদেশ টাইমসঃ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াত নেতাদের নির্যাতন বন্ধ ও অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে তুরস্কের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল ‘সাদাত পার্টি’। রোববার তুরস্কের ঐতিহাসিক বাসাফারাসা নদী তীরবর্তী ‘কাদিকায়া স্কয়ারে’ কয়েক হাজার মানুষ এ প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয়।
এতে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে সাদাত পার্টির প্রধান ড. মোস্তফা কামাল বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াত নেতাদের সাথে যা করা হচ্ছে, তা যুগে যুগে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নেরই পুনরাবৃত্তি।
তিনি বলেন, বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ মুসলিম দেশ- বাংলাদেশের এসব নেতাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বিরুদ্ধে গোটা মুসলিম বিশ্ব সোচ্চার হবে এবং কঠোরভাবে তা প্রতিহত করবে।
সমাবেশে মিশরের ক্ষমতাসীন পার্টি ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের’ চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ বাদি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দলটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সবগুলো জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, দলটি জাতীয় সংসদ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গুরু দায়িত্বও পালন করেছে। এমনকি বর্তমান সরকারের সময় জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুই হাজারেরও বেশি মিথ্যা মামলাও হয়েছে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলটির শীর্ষ নেতা অধ্যাপক গোলাম আযম ও মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক করেছে। অথচ তারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ত নন।
আধুনিক বিশ্বের কোথাও এমন নির্যাতনের নজির নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরনের নির্যাতনের ফলাফল অতীতে ভালো হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
সমাবেশে সুদানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আদম ইউসেফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে আটক জামায়াত নেতাদের মুক্তি দেয়া না হলে মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা আরব বিশ্বের বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
সমাবেশে জামায়াতের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন ব্যারিস্টার আবু বাকার।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের ইসলামী নেতাদের শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছে।
ট্রাইবুনালের বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইনকে মুখোমুখি করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, এর বিচার প্রক্রিয়ায় না মানা হয়েছে আন্তর্জাতিক, না দেশীয় আইন। এতে স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংস্থা ইতিমধ্যে এই ট্রাইবুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে হামাসের সামরিক বিভাগের প্রধান মারায়ানা ইসা, আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংগঠনের সভাপতি আহমেদ আবাজি এবং যুবনেতা আকিক আদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। [টাইমস আন্তর্জাতিক ডেস্ক]