আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের দখলকৃত জমিতে বসতি নির্মাণ পরিকল্পনায় অনড় ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা এ কথা জানান।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বসতি নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে না ইসরায়েল। তিনি বলেন, নিজস্ব বৃহত্তর স্বার্থরক্ষায় অটল ইসরায়েল। তাই আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা সম্ভব নয়।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জেরুজালেমের জেলা পরিকল্পনা কমিশন শিগগিরই কয়েক হাজার বাড়ি নির্মাণ পরিকল্পনার অনুমোদন দেবে। এ ছাড়া দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির মুখে বাতিল হওয়া এক হাজার স্থাপনা নির্মাণের কাজও শুরু করবে।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ইউভাল স্তেইনিত্জ বলেন, ‘জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের একতরফা পদক্ষেপের পর বসে থাকতে পারে না ইসরায়েল। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখানোয় ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের তীব্র সমালোচনা করছে। কিন্তু আমি তাদের বলতে চাই যে আমাদের প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময় এসেছে। আমাদের সমালোচনার মাধ্যমে তারা (ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র) পক্ষান্তরে ফিলিস্তিনিদেরই হুঁশিয়ার করে দিচ্ছে।’
এদিকে ফিলিস্তিনের প্রধান সমঝোতাকারী সায়েব এরেকাত বলেন, ‘এই বসতি স্থাপন সম্পন্ন হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতার পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে। এতে পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী করা যাবে না। শান্তি আলোচনা ও ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সমঝোতার আর পথ থাকবে না।’
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৩৮ সদস্য দেশের ভোটে ‘পর্যবেক্ষক ভূখণ্ড’ থেকে ‘অসদস্য দেশ’-এর মর্যাদা পায় ফিলিস্তিন। এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় নতুন স্থাপনা নির্মাণের ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে দখল করা ভূমিতে ইসরায়েলের ওই স্থাপনা নির্মাণের তীব্র বিরোধিতা করেছে বিশ্ব শক্তিগুলো।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন বলেন, ‘ইসরায়েলের বসতি স্থাপন সিদ্ধান্ত ‘দুই-রাষ্ট্র সমাধান’-এর পথে ‘বড় ধরনের আঘাত’ হয়ে দাঁড়াবে।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেন, তিনি এ ধরনের সিদ্ধান্তে ‘খুবই উদ্বিগ্ন’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নে বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি নেতাদের একতরফা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।’ তিনি বলেন, ইসরায়েলের এ ধরনের কাজ দুই রাষ্ট্র সমাধানের ক্ষেত্রে সরাসরি সমঝোতার পথ রুদ্ধ করে দেবে। রয়টার্স।