আজ || বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরে ‘কল্যাণের শপথ সেবা সংঘ’র কমিটি গঠন       গোপালপুরে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন       গোপালপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি       ভূঞাপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি       গোপালপুরে ১৮ বছর পর স্বনামে ফিরলো আব্দুস সালাম পিন্টু কলেজ       গোপালপুরে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত       ক্ষেতের আইল দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা       গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন       গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর পৌর শাখার কর্মী সম্মেলন       ইমনরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াত আমীর     
 


খালেদা জিয়ার চীন সফর রাজনৈতিক নানা বিশ্লেষণ

বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চীন সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা, বাড়ছে কৌতূহল। চলমান রাজনীতিতে এর কতোটুকু প্রভাব পড়বে তা নিয়েও শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশেষ করে সরকারী দল আওয়ামী লীগ এ সফর নিয়ে নেগেটিভ কথাই বলেছে। কেউ কেউ এটাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় ও সম্পর্ক জোরদার করার কূটনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেখছেন। কেউ দেখছেন রামুতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকারের সাথে চীনের সম্পর্ককে নষ্ট করার অপচেষ্টা অংশ হিসেবে এই সফর। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশ ও বিএনপির সাথে চীনের বন্ধুত্বের গভীরতা বাড়াতেই খালেদা জিয়া চীন সফর করছেন। সূত্র মতে, এ সফর বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারলে চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়নে জোর দেবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। উল্লেখ্য, নানা সমীকরণের মধ্যে রয়েছে খালেদা জিয়ার চীন সফর। বিএনপি মনে করে, চীনের সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের সম্পর্ক ভালো নয়। এ কারণে সম্প্রতি ৫ জন মন্ত্রীর সমন্বয়ে ৪০ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের চীনা প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের কথা থাকলেও অতি সম্প্রতি তা বাতিল করে দেয় চীন।
বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের নানা কর্মকান্ডে চীন অসন্তষ্ট। কারণ হিসেবে জানা গেছে, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন। চট্টগ্রাম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে চীন কারিগরি সহায়তা দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত তা প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। একইভাবে বিএনপি আমলে চট্টগ্রাম থেকে কুনমিং পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগের কার্যক্রম শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তা স্থগিত হয়ে আছে। চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়াওউ দ্বীপ নিয়ে জাপানের সঙ্গে যে বিরোধ চলছে তাতে বাংলাদেশের সমর্থন চেয়েছে চীন। কিন্তু সরকার এ বিষয়েও নীরব ভূমিকা পালন করছে।
সরকারের সাথে চীনের এ শীতল সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চীন সফরে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চীনের সাথে জাতীয়তাবাদী দলের পূর্ব প্রতিষ্ঠিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়নে গুরুত্ব দিচেছন বিএনপি ও বিএনপির চেয়ারপারসন। চট্টগ্রাম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে সহযোগিতার পূর্ণ সম্মতিসহ অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ, পূর্বমুখী আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণ, সেতু নির্মাণ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিনিয়োগে চীনের সহযোগিতা চাইতে পারেন খালেদা জিয়া। এছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলে চীন-জাপানের বিরোধে জোরালোভাবে মধ্যস্থতা করার অঙ্গীকার করতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, চীন সফরে খালেদা জিয়ার সাথে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান ও সে দেশের প্রেসিডেন্টসহ চীনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠকের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় থাকবে বাংলাদেশ ও বিএনপির সাথে চীনের যে গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে তা আরো ঘনিষ্ঠ করা। তিনি আরও জানান, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরই বাংলাদেশের সাথে চীনের কূটনীতিক সম্পর্কের উন্নতি শুরু হয়। এ কারণে চীনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিকপূর্ণ পর্যায়ে পেঁৗছায়। পুরোনো সম্পর্কের ভিত্তিতে খালেদা জিয়া ভবিষ্যতে চীনকে বাংলাদেশের আরো গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে প্রত্যাশা করেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সফর নিয়ে বলেন, এটি শুভেচছা সফর হলেও রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিবেচনায় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন হচ্ছে আমাদের বড় উন্নয়ন অংশীদার। ফলে এ সফরে পারস্পরিক সুসম্পর্কের ভিত্তিতে কিভাবে ভবিষ্যৎ পথচলা মসৃন হয় চীন সফরে সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ খালেদা জিয়ার চীন সফর সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পরিচিত। এ পরিচয়কে ‘ধ্বংস’ করতে খালেদা জিয়া চীনে গেছেন। রামুতে বৌদ্ধদের ওপর হামলা হওয়ায় তারা কিছু রিপোর্ট ও ছবি নিয়ে চীনে গেছেন। এর দ্বারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট করতেই খালেদা জিয়ার এই সফর। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, এর আগে দিনাজপুর ও সাতক্ষীরায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা তখন বিএনপি সেখানে যায়নি কেন। এখন রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হওয়ায় তারা এতো কিছু করছে কেন। এ নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান মাহবুব-উল-আলম হানিফ। উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৭ দিনের চীন সফর শেষে আজ শনিবার দেশে ফিরছেন।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!