নেপালে জেল পালানো বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কলকাতার বড়বাজার এলাকায় গ্রেফতার হয়েছেন। সুব্রত বাইন ইন্টারপোলের রেডকর্নার নোটিশপ্রাপ্ত আসামি ।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে কলকাতার পুলিশ গ্রেফতার করে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
সুব্রত বাইনের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পুলিশের মহা-পরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরা এখনো জানতে পারিনি। ভারত সরকার আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইন্টারপোলের এআইজি মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে ইন্টারপোলের কাছে তালিকা রয়েছে। যে কোনো দেশই তাদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতা করতে পারে।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর সুব্রত নেপালের জেল ভেঙে ভারতে পালিয়ে যান।
এই সন্ত্রাসী ২০০৫ সালে স্ত্রী বিউটির নামে বাড়ি কিনে দক্ষিণ কলকাতার কড়েরা থানার পাম এভিনিউ ও মেফেয়ার রোডের সংযোগস্থলে থাকতে শুরু করেন। নিজস্ব বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্কফোর্সের (এসটিএফ) গোয়েন্দারা। তার কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
জামিনে মুক্তি পেয়ে সুব্রত প্রথমে শিলিগুড়িতে যান। সেখান থেকে নেপালের ঝাপা জেলার সীমান্ত এলাকা কাঁকর ভিটার সুসারি এলাকায় থাকতে শুরু করেন।
২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের দুই কর্মকর্তা সুব্রত বাইনকে পিছু ধাওয়া করে নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়লে সেখানকার পুলিশ তিনজনকেই গ্রেফতার করে।
এর এক সপ্তাহ পর নেপালে ভারতীয় দূতাবাসের হস্তক্ষেপে ছাড়া পায় কলকাতা পুলিশের দু`কর্মকর্তা।
সুব্রত বাইনকে প্রকাশ্যে অশোভন আচরণের (নুইসেন্স ইন পাবলিক) দায়ে পূর্ব নেপালের ভাদ্রপুর জেলে রাখা হয়।
এরপরই গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সুরঙ্গ খুঁড়ে ওই জেল থেকে পালিয়ে যান বলে ভারতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে বিবিসি বাংলা জানায়, কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিত পচনন্দা বলছেন, তাঁদের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স কলকাতার বউবাজার এলাকা থেকে সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বাংলাদেশের জেল থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পরে তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন আর নাম বদলে কলকাতার একটি বর্ধিষ্ণু এলাকায় থাকতেন।
মাঝে মাঝে তিনি চীন যেতেন বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
২০০৮ সালে কলকাতার পুলিশ তাঁকে একবার গ্রেপ্তার করেছিল৻ পরের বছর তিনি জামিন পেয়ে নেপালে পালিয়ে যান।
কলকাতা পুলিশের দুই অফিসারের সাহায্যে নাটকীয়ভাবে মি. বাইনকে গ্রেপ্তার করে নেপালের পুলিশ।
তাঁকে নেপালের ভদ্রপুর জেলে রাখা হয়েছিল।
সপ্তাহ তিনেক আগে মি. বাইন সুড়ঙ্গ কেটে ভদ্রপুর জেল থেকে পালান বলে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বলছেন, সুব্রত বাইনকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।